রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আইন বিভাগের রিক্তা আক্তার নামের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু ঘটেছে। এই ঘটনায় রিক্তার পিতা লিয়াকত আলী জোয়ার্দার বাদী হয়ে তার স্বামী আবদুল্লাহ ইসতিয়াক রাব্বিকে আসামী করে মতিহার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় রাব্বিকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার আলী তুহিন।

আনোয়ার আলী জানান, মরদেহ ময়না তদন্তের পর রিক্তার বাবার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। রিক্তার পিতা বাদী হয়ে থানায় এজাহার দায়ের করেছেন। আমরা ৩০২ ধারায় মামলা নিয়েছি এবং তার স্বামীকে (রাব্বি) গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেতে কয়েকদিন সময় লাগবে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিহত রিক্তা আক্তার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (২০১৯-২০) সেশনের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালি উপজেলার জোহপাড়া গ্রামে। আবদুল্লাহ ইসতিয়াক রাব্বি একই শিক্ষাবর্ষের ফলিত গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ড উপজেলার পোড়াহাটি গ্রামে।

আরও পড়ুন…রাবি ছাত্রীর ওড়না পেঁচানো লাশ উদ্ধার

দুই বছর আগে তাদের পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশ্ববর্তী ধরমপুর এলাকায় তারা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। শুক্রবার (২৯ জুলাই) দিবাগত রাত ১২টার দিকে রিক্তাকে গলায় ওড়নাজানা পেঁচানো অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেলে নিয়ে যায় রাব্বি এবং তার বন্ধু। পরে সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

জানাযা এবং প্রতিবাদী সমাবেশ

গতকাল শনিবার বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে তার জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে সেখানে আইন বিভাগের সভাপতি হাসিবুল আলম প্রধানের সঞ্চালনায় এক প্রতিবাদী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

নিহতের বাবা লিয়াকত আলী বলেন, ‘আমি একজন চাষি মানুষ। পরিবার থেকে কেউ আগে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত আসেনি। একমাত্র মেয়ে এখানে এসেছে। তার এমন মৃত্যু কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারছি না। আমার মৃত্যু পর্যন্ত হত্যাকারীদের সঙ্গে কোনো আপস করবো না। আমি মেয়ে হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করছি।’

সমাবেশে আইন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িতের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছে। একই সঙ্গে রাব্বিকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের দাবি জানায় তারা।

জানাযায় উপস্থিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, ‘নিহত শিক্ষার্থীর বাবা তার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। আইনি প্রক্রিয়ায় আমরা তার পরিবারকে সহায়তা করবো। যাতে দ্রুত তদন্ত হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেখে আমরা ছেলেটার ছাত্রত্ব সাময়িকভাবে বাতিল করবো। এছাড়া রিক্তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন তিনি।

কলমকথা/এসএইচ